নড়াইল সদর থানা পুলিশের অভিযানে ধর্ষণ ও মানব পাচার মামলার আসামী গ্রেফতার

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল:  নড়াইলে পুলিশের অভিযানে ধর্ষণ ও মানব পাচার মামলায় আসামী গ্রেফতার। নড়াইলে ধর্ষণ ও মানব পাচার মামলায় আরিফুল মোল্যা (৩০) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে নড়াইল সদর থানা পুলিশ।
গ্রেফতার হওয়া আরিফুল জেলার লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাকা মিয়া মোল্যার ছেলে। উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আরিফুলের বড় ভাই শরিফুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়াতে রয়েছেন। এই সুযোগে আরিফুলের কুনজর পড়ে তার ভাবির উপর।
সে প্রায়শই তার ভাবিকে উত্যক্ত করতো।বিষয়টি তিনি (ভাবি) প্রতিবাদ করলেও আরিফুল তাতে ভ্রæক্ষেপ করতো না। ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী প্রবাসে থাকায় তিনিও উত্যক্তের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেননি। একই বাড়িতে থাকার কারণে আসামী আরিফুল ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ভুক্তভোগীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। ভুক্তভোগী লোকলজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু বলতে না পেরে তার স্বামীকে বিষয়টি জানালে স্বামীর পরার্শক্রমে ওই নারী তার দুই সন্তান নিয়ে নড়াইল জেলার সদর উপজেলাধীন দক্ষিণ নড়াইল (দাসপাড়া রাইফেল ক্লাবের পাশে) ভাড়া বাসায় বসবাস করতে থাকেন। কিন্তু সেখানেও শেষ রক্ষা হয়নি তার। ভাড়া বাসায় থাকাকালীন সময়েও আসামী আরিফুল, মুন ও জালাল প্রায় সময় ভুক্তভোগীর নগ্ন ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করতে থাকে।
গত ১৫ জানুয়ারি অভিযুক্ত আরিফুল ও মুন ওই নারীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে অপর দুই অভিযুক্ত জালাল শিকদার ও সেলিম মোল্যার যোগসাজশে ভারতে পাচার করে দেয়।পরবর্তীতে গত ১৫ ফেব্রæয়ারি ভুক্তভোগী ওই নারী ভারত থেকে কৌশলে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। ঘটনা উল্লেখপূর্বক গত ২০ ফেব্রæয়ারি ওই নারী বাদি হয়ে নড়াইল সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ এর ৯(১) তৎসহ মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২ এর ৬/৭/৮ ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলা রুজু হওয়ার পর সদর থানা পুলিশ গত সোমবার (২০ ফেব্রæয়ারি) অভিযান চালিয়ে আরিফুলকে গ্রেফতার করে।এ মামলায় লাহুড়িয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বাকা মিয়া মোল্যার জামাতা মুন (৩২), মাগুরা জেলার সদর উপজেলাধীন বলুগ্রাম এলাকার মোঃ আলফু শিকদারের ছেলে জালাল শিকদার (৩৫) ও নড়াইল সদর উপজেলাধীন বরাশুলা গ্রামের বাসিন্দা সেলিমকে (৩৫) আসামি করা হয়েছে।
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মাহমুদুর রহমান জানান, ভুক্তভোগী নারী নড়াইল সদর থানায় মামলা দায়ের করার পর পুলিশ মামলার প্রধান আসামি আরিফুলকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে প্রেরণ করেছে। বাকি আসামিদেরকেও দ্রæত গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.