প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে দ্বিতীয়বার কেন্দ্র ফি আদায়

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরে কমলনগরে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে দ্বিতীয় বার কেন্দ্র ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিরুদ্ধে।

জানা যায় প্রধাণন ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট থেলে ৫৫০ – ১২০০ টাকা প্রর্যন্ত আদায় করছেন ।

উপজেলার প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানগন পরিক্ষার্থীদের থেকে কোচিং ফি বলে প্রবেশ পত্র বিতরণ কালে এই ফি আদায় করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেন্দ্র সচিব ও প্রতিষ্ঠান প্রধানদের দ্বিতীয়বার কেন্দ্র ফি ও প্রবেশ পত্র বিতরণ কালে কোন প্রকার ফি নেওয়া যাবে না বলে সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছেন।এ ব্যাপারে গত ২১ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। স্ট্যাটাস হুবাহুব তুলে ধরা হল “কমলনগর উপজেলায় মাধ্যমিক/সমমান পরীক্ষার প্রবেশপত্র প্রদানের সময় কোনো প্রকার ফি আদায় করা যাবে না।

কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অর্থ চাইলে অবহিত করুন”। এর পরেও উপজেলার প্রায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ভাবে সুকৌশলে অর্থ আদায় করেছেন। কেউ কোচিং ফি, কেউ হল চার্জ, কেউ কেন্দ্র খরচ,কেউ ব্যবহারিক ফি, কেন্দ্রের আনুসাংগিক ফি, আবার অনেক প্রতিষ্ঠান কোচিং ও করান নি নিয়েছেন কোচিং ফি আবার যারা কোচিং করেছেন অনেক প্রধান শিক্ষক সেই কোচিংনের টাকা থেকে ভাগবসান এডমিট কার্ড বিতরণের টাকা আদায়ের বেলা।২০২৩ সনের এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় শিক্ষাবোর্ডের দেওয়া নীতিমালা কোন প্রতিষ্ঠান মানেনি।পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণে বিজ্ঞান বিভাগের বোর্ড ফি ১,৬২৫ টাকা কেন্দ্র ফি: (ব্যবহারিক ফি সহ)৫১৫ =২১৪০ টাকা। ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ও মানবিক শাখায় বোর্ড ফি ১,৫৩৫ টাকা কেন্দ্র ফি ৪৮৫ টাকা (ব্যবহারিক ফি সহ)=২০২০টাকা। শিক্ষাবোর্ডের পক্ষে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ বোর্ডের এই নীতিমালা কে তোয়াক্কা না করে ২৫০০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকা আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে। এখন আবার নতুন করে এডমিট কার্ড(প্রবেশ পত্র) বিতরণের সময় কেন্দ্র ফি নামে ৫০০ টাকা (যা আগে আদায় করা হয়েছে) এখন আবার দাবী করছে যা মোটেও কাম্য নয়।চর জগ বন্ধু শফিক গঞ্জ বাজার দাখিল মাদ্রাসার পরিক্ষার্থী আরমান, ফারুক, জুয়েল, সুমাইয়া, মাহমুদা তাহমিনা,তানজু, নাছরিন জানান, সুপার নুর নবী প্রবেশপত্র দিয়ে তাদের সবাই থেকে ৬০০ টাকা করে নিয়েছেন।চর জগবন্ধু সফিগঞ্জ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোঃ নুরনবী জানান, তিনি এডমিট কার্ড বিতরণ করে কোন টাকা নেননি এবং তিনি সংবাদ পরিবেশন না করার অনুরোধ করেন। চর শামছুদ্দীন জাহেরিয়া মাদ্রাসা ৮০০ টাকা, লরেঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ৫০০ টাকা,মুন্সি গঞ্জ ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা ৫৫০ টাকা, তোরাব গঞ্জ আহমদিয়া দাখিল মাদ্রাসা ৫০০ টাকা, চর মার্টিন উচ্চ বিদ্যালয় (মেজর মান্নান উচ্চ বিদ্যালয়) ৫০০টাকা, হাজির হাট হামেদিয়া কামিল মাদ্রাসা ৭০০ টাকা, আল আরাফা দাখিল মাদ্রাসা ৬০০ টাকা,তোয়া স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ৫০০ টাকা এবং জগবন্দু উচ্চ বিদ্যালয় ৫০০ করে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
তোরাবগঞ্জ আহমদিয়া দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মকবুল আহমেদ জানান,কেন্দ্র কমিটির মিটিং এর সিদ্ধান্ত হয়েছে।সেখানে উপজেলার ১৪টি মাদ্রাসার সুপার উপস্তিত ছিলেন। আমরা ৫০০ টাকা করে নিয়েছি কেন্দ্র কমিটি বললে আবার ফেরত দিব।হাজির হাট হামিদিয়া কামিল মাদ্রাসার পিন্সিপাল ও কেন্দ্র সচিব মো:দেলোয়ার হোসেন প্রতিবেদককে জানান,কেন্দ্র ফি আমরা নিয়েছি,কেন্দ্রে ফি না নিলে কেন্দ্র চলবে কি করে। ইউএনও তো কেন্দ্র চালায় না ইউএনও নিষেধ করলে কি হবে। বিজেপ্রেস থেকে প্রশ্ন আনতে ডিসি কে দিতে হয় ৬ হাজার টাকা।লক্ষ্মীপুর জেলা সুজন সভাপতি মো: কামাল হোসেন জানান,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সতর্কের পরেও যারা অতিরিক্ত ফি নিয়েছেন তা যেন ফেরত দেওয়া হয়।এটা একধরনের বানিজ্য উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেন অন্তত এই বানিজ্য বন্ধ হয়। জিলা শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম কুমার বলেন, অভিযোগ শুনেছি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ফেরদৌস আরা জানান,আমরা অভিযোগ শুনেছি বারবার সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে এর পরেও যারা অতিরিক্ত ফি নিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.