বদলগাছীতে গোখাদ্য ঘাস চাষে ভাগ্য বদল ইউনুস বয়াতীর, দেওয়া হয় হুম ডেলিভারী

এমদাদুল হক দুলু, বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর বদলগাছীসহ জেলার সব এলাকাতেই গো-খাদ্য উন্নত প্রজাতীর ঘাস চাষ এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যারা গরু ছাগল লালন পালন করেন, এদের মধ্যে অনেক কৃষকই ৫/১০ কাঠা জমিতে ঘাস চাষ করেছে আবার অনেক কৃষক নিজের চাহিদা মিটিয়ে ঘাস স্থানীয় হাটে বাজারে বিক্রি করেন। এক আঁটি ঘাস বিক্রি হয় ৩০/৪০ টাকায়। শুধু ঘাস চাষ করে নিজের ভাগ্য বদল করেছে একজন সফল ঘাস চাষী উপজেলার মিঠাপুর এলাকার ইউনুছ বয়াতী। সম্প্রতি পেশাগত কাজে গিয়ে মিঠাপুর এলাকায় দেখতে পেয়ে এ প্রতিবেদককে ইউনুছ বয়াতী বলেন আমি তো কৃষি কাজে অনেক বড় একটা ভ‚মিকা রাখি। আমাকে নিয়ে কিছু লেখেন না কেন। সে নিজে ভ্যান চালিয়ে আমার সামনে আসে তখনো ভ্যানে কয়েক আঁটি ঘাস ছিল। তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখলাম লম্বা ও লিকলিকে বডি, মাথায় লম্বা চুল। জানতে চাইলাম কি করেন আপনি উত্তরে বললেন আমি একজন বয়াতী, গানকরি এবং একজন সফল ঘাস চাষি। বিক্রি করি হুম ডেলিভারি দিয়ে। দেখতে গেলাম তাঁর ঘাস ক্ষেত । মিঠাপুর পুরাতন বাজারের ইটভাটার পাশেই তাঁর ঘাস ক্ষেত। উচু নিচু জমি মিলে সাড়ে ৬ বিঘা জমিতে সে ঘাস চাষ করেছে।

শীত কালীন ও গীস্ম কালীন চাষের ভিন্ন ভিন্ন জাত রয়েছে। এর মধ্যে জারা-১, নেপিয়ার ঘাস, পাংচুন ঘাসসহ নানা প্রজাতীর ঘাস সে চাষ করেছে। এর মধ্যে বিবি ওয়ান জাত ঘাস গরমে ফলন ভালো হয়। পাংচুন ও নেপিয়ার হয় শীতে। প্রতিদিন ২৫শ থেকে ৩ হাজার টাকা ঘাস বিক্রি করেন। আবার কোন ঘাস ব্যবসায়ীরা এসে পাইকারী কিনে নিয়ে যায়। তথ্য সংগ্রহকালে সেখনে উপস্থিত কৃষক হাফিজার জানায় বয়াতী একজন সফল ঘাস চাষী। সে ঘাস চাষ করে অনেক লাভবান। ঘাস ছাড়া সে অন্য কোন ফসল করে না। আমার জমিটাও তাঁর কাছে লীজ দেওয়া ছিল খুলে নিয়েছি।

উজালপুর গ্রামের সুইট জানায় তাঁর ৪টি গাভী। প্রতিদিন ঘাস লাগে ২০ আঁটি। বেশী করে নেয় জন্যই দাম দেয় ২০ টাকা আঁটি। সপ্তাহে অথবা মাসে মুল্য পরিশোধ করি। বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ায় আমরা উপকৃত হয়।
ঘাস চাষী ইউনুছ বয়াতী খাদাইল ব্রামন পুখুরিয়া গ্রামের লোকমান আলীর ছেলে।

বয়াতী বলেন, আমার নিজের জমি সোয়া বিঘা, ৫ বিঘার কিছু বেশী জমি লিজ নিয়ে মোট সাড়ে ৬ বিঘা জমি ঘাস চাষ করেছি। অন্য ফসলের তুলনায় ঘাস চাষে বেশী লাভ। বছরে ৩বার জমিতে ফসল ফেলানো হয় আর একই জমি থেকে বছরে ৬ বার ঘাস কাটা হয়। এক বিঘা জমিতে একবার ঘাস কাটলে ৪০/৪২ হাজার টাকা ঘাস বিক্রি হয়। আমি জমি লিজ নিয়েছি বছরে ২০/২২ হাজা টাকা বিঘা দরে। বয়াতী আরো জানান আশে পাশে বিভিন্ন গ্রামে ৬০/৭০টি পরিবার রয়েছে। তাদের বাড়ি বাড়ি ঘাস পৌঁছে দিতে হয়। এক আঁটি ঘাস ৩০/৪০ টাকা বিক্রি হয় তবে কেউ বেশী পরিমান কিনলে তখন কিছুটা দাম কমে দেয়। এ ছাড়া হাটে বাজারেও বিক্রি করা হয়। ঘাস চাষে আমি বেশী লাভবান তাই অন্য কোন ফসল করি না।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: নাজমুল হক বলেন গো-ছাগলের উন্নত খাবার ঘাস। ঘাসে ভিটামিন হরমন বেশী। ঘাস খাওয়ালে গাভী সময় মত বাচ্চা ও পরিমান মত দুধ দিবে। তাই সব সময় খামারীদের ফাকা জায়গা জমিতে ঘাস চাষে পরামর্শ দিচ্ছি। আমি ইউনুছ বয়াতীর ঘাস ক্ষেত দেখতে যাবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published.