ভুুমি দস্যু শার্শার সাবেক এমপি শেখ আফিল উদ্দিন যে ভাবে জমি দখল করতেন

মোঃ আনিছুর রহমান, প্রতিনিধি বেনাপোল : যশোর এর শার্শা-১ আসনের  সাবেক এমপি শেখ আফিল উদ্দিন এক আতঙ্কও নাম। গোটা শার্শায় হত্যা গুম ও জমি দখল ছিল তার রাজনীতির মুল নিতী।  শেখ আফিল উদ্দিন এমপি থাকাকালে তার বিরুদ্ধে গোটা শার্শায় সোনা চোরাচালান, সীমান্তে গরুর খাটাল ও হাট নিয়ন্ত্রণ, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, হত্যা, জমি দখলসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। ২০১০ সালের ১৫ আগস্ট বিকেলে তার জুট মিলে ডেকে এনে তৎকালীন শার্শা থানার ওসি এনামুল হককে বেদম মারধর করেন।

পাড়ুইঘুপি গ্রামে আব্দুল হামিদ নামে লণপুর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্যকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যে ১৬ জনকে আসামি করা হয়, তারা শেখ আফিলের ক্যাডার ছিলেন। সে কারণে তিনি প্তি হয়ে পুলিশের ওই কর্মকর্তাকে ডেকে এনে ব্যাপক মারধর করেন।

সাবেক এমপি শেখ আফিল উদ্দিনের বিরুদ্ধে প্রায় তিনশ’ বিঘা জমি জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। তারা বলছেন, মতায় থাকাকালে তিনি সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিয়ে জোর করে সেসব জমি দখল এবং পরে নামমাত্র দামে কারও কারওটা লিখে নেন। ভুক্তভোগীরা জানান, এবার তারা আইনের আশ্রয় নেবেন।

যশোরের শার্শা উপজেলা সদরে রয়েছে আফিল জুট উইভিং মিলস লিমিটেড। যার মালিক সাবেক এমপি শেখ আফিল উদ্দিন। ১১০ বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলা এই মিলটির প্রায় ৫০ বিঘা জমিই জোর করে দখল করে নেন তিনি।

শার্শা উপজেলার চটকাপোতা গ্রামের বাসিন্দা আজিজুর রহমান খান বলেন, আমি একজন কৃষকের সন্তান। এই মিলের মধ্যে আমার সাড়ে চার বিঘা জমি রয়েছে। মিল তৈরির সময় প্রধান গেটের মুখে থাকা আমার জমি আফিল উদ্দিন তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে জোর করে দখল করে নেন। জুট মিলের জন্য শার্শা উপজেলার চটকাপোতা গ্রামের বাসিন্দা শিক নাজিম উদ্দিনের ৪২ শতাংশ জমি জোরপূর্বক দখল করেছেন আফিল উদ্দিন। শার্শা মৌজায় তার জমির খতিয়ান নং-২২৫৫, জেএল নং-৭২।

শার্শা উপজেলার লণপুর ইউনিয়নের হরিণাপোতা মৌজায় সাবেক এমপি শেখ আফিলের প্রায় ২২৫ বিঘার একটি ঘের রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০ বিঘা জমি রেকর্ডীয় সম্পত্তি, বাকি অংশ জোর করে দখল করা এবং নামমাত্র দামে কেনা। সরকারি খাসজমিতে কোনো স্থাপনা কিংবা ঘের করার অনুমতি না থাকলেও শেখ আফিল সেগুলো থোড়াই কেয়ার করেছেন।

চটকাপোতা গ্রামের মোকাররম হোসেনের ছেলে আতাউর রহমান অভিযোগ করে বলেন, হরিণাপোতা মৌজায় আমাদের একটি ভেড়িবাঁধ ছিল। চাষাবাদ করে সংসার চালাতাম। সেখানে আমাদের ৯ একর রেকর্ডীয় সম্পত্তি এবং ২৫ বিঘা জমি (এনিমি) কেনা ছিল। মোট ৫২ বিঘা জমির সবটুকুই শেখ আফিল উদ্দিন প্রথমে জোর করে দখল করেন। এরপর নামমাত্র মূল্যে লিখে নেন। যার খতিয়ান নম্বর ১৯৫, হরিণাপোতা মৌজা, জেএল নম্বর ৫৫।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে শার্শার নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডা. কাজী নাজিব হাসান বলেন, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। এর মধ্যে কেউ এসব বিষয়ে অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যোগাযোগ করা হলে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোছাইন বলেন, সাবেক এমপি শেখ আফিল উদ্দিনের বিরুদ্ধে যদি কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসে, আমরা তা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

Leave a Reply

Your email address will not be published.