মাগুরা প্রতিনিধি খন্দকার নজরুল ইসলাম মিলন : মাগুরা পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডে নান্দুয়ালী গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক বিশ্বাস ওরফে রতন মাস্টারের (৭৫) মৃত্যুর পর তাকে গোসল করানোর সময় আঙ্গুলে মিলেছে কালির দাগ।
পরে পুলিশে খবর দিলে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।
আব্দুর রাজ্জাক বিশ্বাস নিজনান্দুয়ালী গ্রামের মৃত মোজাহার আলী বিশ্বাসের পুত্র ।
সরে জমিনে তথ্য সংগ্রহকালে জানা যায়, মৃত্যুর পর গোসল দিতে গিয়ে বৃদ্ধের আঙ্গুলে নীল কালির ছাপ পাওয়ায় থানায় অভিযোগ করেন তার ভাই। ফলে মরদেহ দাফন না করে ময়নাতদন্ত করতে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
তাছাড়া ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড হতে পারে সন্দেহে মৃতের মেয়ে ও তার স্বামীর নামে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
থানায় অভিযোগে বাদী মো. গোলাম রসুল লিখেছেন, আব্দুর রাজ্জাক বিশ্বাস (রতন মাস্টার) দীর্ঘ ৫-৬ বছর যাবৎ প্যারালাইজড হয়ে তার মেয়ের সঙ্গে নিজের বাড়িতেই বসবাস করতেন।
রবিবার সকাল ৬টার দিকে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তাকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে সোমবার আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে ভাগ্নে আকমলের মাধ্যমে জানতে পারেন ভাই আব্দুর রাজ্জাক মারা গেছেন।
রবিবার রাতে মরদেহের গোসল দেওয়ার সময় মসজিদের মোয়াজ্জেম আলিমুল ও মুনসুরসহ আরও অনেকে আব্দুর রাজ্জাকের বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলে নীল কালির ছাপ দেখতে পান।
পরে ভাইয়ের মৃত্যু অস্বাভাবিক ভাবে হয়েছে ধারণা করে বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনি ব্যবস্থা নিতে থানায় অভিযোগ করেন। যার প্রেক্ষিতে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে।
মরদেহটি গোসল করাতে আসা মুনসুর বলেন, ‘রাতে পলাশ নামের এক যুবক মরদের গোসল করানোর জন্য আমাদের কাছে গেলে আমরা তিনজন গোসল করাতে আসি। গোসল করানোর সময় তার হাতে কালির দাগ দেখতে পেয়ে তাদের বিষয়টি জানাই।’
নিহতের ভাতিজা রাজন বলেন, ‘আমার চাচার বাড়ির সম্পত্তি অর্ধেক অংশ চাচীর নামে ছিল যার মালিকানা চাচাতো বোনের। বাকি অর্ধেক অংশ চাচা তাকে লিখে না দেওয়ায় তাকে জোর করে টিপসই দিয়ে জায়গা লিখে নিয়ে তাকে হত্যা করতে পারেন। এটি হত্যা নাকি স্বাভাবিক মৃত্যু তা তদন্ত করতেই মূলত আমরা থানায় অভিযোগ করেছি।’
এ বিষয়ে মৃতের একমাত্র মেয়ে তানিয়া মাহজাবিন বলেন, ‘আমার মা অনেক আগে মারা গেছেন। বাবা দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিল। আমার মায়ের বাড়ি রাজশাহীর সম্পত্তি বন্টনের জন্য বাবাকে নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে দুপুরে বন্টনের কাজ শেষ হয়েছে। হঠাৎ বিকেল পাঁচটার দিকে বাবা মৃত্যুবরণ করেন।
রাতে মাগুরার বাড়িতে নিয়ে এসে গোসল সম্পন্ন করে সকালে দাফনের ব্যবস্থা করা হলে আমার চাচা ও চাচাতো ভাইয়েরা থানায় অভিযোগ করেছেন।
আমার কোনো ভাই না থাকায় সম্পত্তির লোভেই মূলত তারা এই কাজ করছেন।’
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আইয়ুব আলী বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।