সাবধান! হিংসুটেরা হিংসা রোগ ছড়াতে ব্যস্ত

মোহাম্মদ আককাস আলী : যুগে যুগে হিংসুটেরা হিংসা প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে। হিংসুটেরা হিংসা রোগের আক্রান্ত ছড়াচ্ছে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে। এই ঘৃণ্য নিন্দনীয় বেড়াজাল থেকে বের হতে পারছে না লোভনীয় মানুষগুলো। আর এই নৈতিকতাকে অবক্ষয়ের দিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে ঘুণপোকারা। প্রিয় পাঠক! মৌলিক দুর্বলতাটি হচ্ছে হিংসা। আর এই হিংসা হচ্ছে নৈতিকতার মারাত্মক সমস্যা। হিংসা সম্পর্কে ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করা এবং ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে তার ধ্বংসাত্মক প্রভাব নিয়ে আরো কিছু লেখার চেষ্টা করবো। হিংসা কাকে বলে, তা আমরা অনুধাবন করতে পারি না। ভাষা দ্বারা প্রকাশ করতে ব্যর্থ হই বিধায় হিংসা করা থেকে আমরা পুরোপুরিভাবে বেঁচে থাকতে পারছি না। মূলত হিংসা আত্মার একটি ব্যাধি।
অপরের ভালো বা উন্নতি দেখে মনে মনে তার ধ্বংস কামনা করার নাম হিংসা। আমরা মুখে উচ্চারণ করি এবং অন্তর দ্বারা বিশ্বাস করি, হিংসা করা মহাপাপ।
মূল বিষয় হল, যার মধ্যে ধৈর্য, ক্ষমা ও সহানুভূতির অভাব বেশি, তার হৃদয়ে ততবেশি হিংসা নামক মনোরোগটির প্রকোপও বেশি। হিংসা এখন আর নাটক সিনেমাতে নয় বরং প্রতিটি ঘরে ঘরে রাস্তার মোরে মোরে এমনকি স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যায়ে চলে এসেছে।
ব্যক্তি ব্যক্তির পিছনে লেগে আছে। যার সম্পদ আছে সে অন্যের সম্পদের পিছনে লেগে আছে। যার ডিগ্রি আছে সে অন্যের ডিগ্রি পিছনে লেগে আছে। যার চেয়ার আছে সে অন্যের চেয়ারের পিছনে লেগে আছে। এই যে লেগে থাকা তার  পিছনের মূল কারণ হলো “জেলাসি” যেটা হিংসা যা মানুষকে নিকৃষ্ট পর্যায়ে  নিয়ে যায়। এই হিংসার পিছনের মূল কারণ যেটা সেটি হচ্ছে মূলত “সন্দেহ” যা শেষ পর্যায়ে শত্রুতার পর্যায়ে নিয়ে যায়। হিংসা হল অন্যের ভালো দেখলে খারাপ লাগা। আপনার বন্ধু,ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী যাদের সাথে আপনি চলাফেরা করেন তাদের ভাল দেখলে,উন্নতি দেখলে আপনার যদি খারাপ লাগে,তাহলে বুঝবেন যে আপনি হিংসার মানুষিক রোগে ভুগছেন। হিংসা একটা কবিরা (বড়) গুনা। পৃথিবীর বুকে এমন মানুষ খুব কমই হবে যার হিংসা নেই,কম-বেশি হিংসা সবার মধ্যে থাকে।
আফসোস,আমরা হিংসাকে অপরাধ মনে করিনা যদিও কোরআন পড়লে আমরা জানতে পারি,যে সৃষ্টিজগতের প্রথম গুনাহ ছিল হিংসা যাকে জেলাসি বলা চলে।
হিংসার মানুষিক রোগ, এটিতে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তাদের প্রতিপক্ষ এর জন্যও একটি খুব কষ্টদায়ক ব্যাধি হতে পারে।  এটি আক্রান্ত ব্যক্তি সমূহের  জীবনযাত্রার মানকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে এবং সম্পর্কের মধ্যে উচ্চ উত্তেজনা সৃষ্টি করে, যা দীর্ঘমেয়াদি  অস্বাস্থ্যকর জীবনের একটি বহিঃপ্রকাশ। একসময়ে ঐ  ব্যক্তি অথবা ব্যক্তিবর্গ সুইসাইডাল অ্যাক্টিভিটির দিকে ধাবিত হয়। বড় বড় পর্যায়ে সামাজিক অবক্ষয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যুদ্ধবিগ্রহের দিকেও ধাবিত হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে হিংসা।
কবি মোহাম্মদ আককাস আলী তাঁর লিখা বই “কবিতা ও গল্পের রূপকাহিনী”বিভিন্ন গুণীদের হাতে তুলে দেওয়ার সময় উপরোক্ত কথাগুলো উঠে আসে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.