হিমাগারে ৬০-৬৫ কেজি ওজনের প্রায় ৩০ হাজার আলুর বস্তা পচে নষ্ট

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: জয়পুরহাট জেলার মধ্যে  কালাই উপজেলা সবচেয়ে বেশি পরিমাণ আলু উৎপাদন হয়। এই উপজেলার আলুর সুনাম দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও। কালাইয়ে হিমাগারে সংরক্ষণে রাখা আলুর পচন ধরেছে। এ অবস্থায় ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন এলাকার স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হিমাগার কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। অন্যদিকে হিমাগার কর্তৃপক্ষ সংরক্ষণে রাখা আলু পচনের জন্য কৃষক ও ব্যবসায়ীদের দায়ী করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে , উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের একই মালিকের দুটি হিমাগার মান্নান অ্যান্ড সন্স বীজ হিমাগার এবং মুসলিমগঞ্জ মান্নান বীজ হিমাগারে রোমানা জাতের আলু ৬০-৬৫ কেজি ওজনের প্রায় ৩০ হাজার বস্তা আলু পচে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। এ অবস্থায় হিমাগার কর্তৃপক্ষ নিরুপায় হয়ে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সংবাদ দিয়ে তাদের পচা ও দুর্গন্ধ আলু বের করে দিচ্ছে। আলু হিমাগার থেকে বের করার পর বস্তা খুলে দেখা যায় ৬০-৬৫ কেজি ওজনের মধ্যে প্রায় ৩০ কেজি আলু পচে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। বাজারে যেখানে ৬০ কেজি আলুর দাম ২৫শ’ টাকা সেখানে হিমাগারে শেডে পাইকারি বিক্রি করছে এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকায়। এতে করে কৃষক ও ব্যবসায়ীর প্রতি বস্তায় লোকসান গুনতে হচ্ছে ১৩শ’ থেকে ১৫শ’ টাকা। উদয়পুর ইউনিয়নের সানাইপুকুর গ্রামের খায়রল ইসলাম বলেন, মান্নান অ্যান্ড সন্স বীজ হিমাগারে রাখা আমার ৪৫ বস্তা আলু নষ্ট হয়েছে। নষ্ট আলু নিতে গেলে তারা আমার আলুর ক্ষতিপূরণ না দিয়ে উল্টো বস্তাপ্রতি ৩৪০ টাকা ভাড়া নিয়ে আলু ছেড়েছে। এল্লাগাড়ি গ্রাামের ইয়াছিন বলেন, ১ বছর আগেও মান্নান হিমাগারে অনেক আলু পচে নষ্ট হয়েছিল। এবারও আমার আলুসহ অনেক কৃষকের আলু হিমাগারের ভিতর পচে নষ্ট হয়ে গেছে। ব্যবসায়ী রতন বাবু বলেন, আমার নিজ জমিতে উৎপাদিত কোয়ালিটি সম্পন্ন আলু মান্নান অ্যান্ড সন্স হিমাগারে রাখি। তারপরও আমার এত ভালো ও মানসম্মত আলু তাদের অবহেলার কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, এবার এ হিমাগারে অনেক আলু পচে নষ্ট হয়ে গেছে-যা হিসাব মিলানো মুশকিল।
হিমাগার কর্তৃপক্ষ জানান, হিমাগারে সংরক্ষণের জন্য নিয়ে আসা আলুর বয়স কম এবং আলুর সঙ্গে মাটি লেগে থাকার কারণে এই পচন ধরেছে। হিমাগারে রোমানা জাতের আলু ছাড়া অন্য কোনো জাতের আলুতে কোনো প্রকার পচন ধরেনি।
কালাই কৃষি কর্মকর্তা অরুন চন্দ্র রায় জানান, কোনো কৃষক বা ব্যবসায়ী যদি এ বিষয়ে অভিযোগ দেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হায়াত জানান, এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি, অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.